২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৯:২৭
শিরোনাম:

পঞ্চগড়ে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা বেড়ে ২০, গ্রেপ্তার ১৮৭ জন

পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) বার্ষিক জলসাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নতুন করে আরও ৪টি মামলা হয়েছে। এ নিয়ে মামলা সংখ্যা দাঁড়াল ২০। গত ২৪ ঘণ্টায় ছয়জনসহ মোট গ্রেপ্তার হলেন ১৮৭ জন।

রোববার (১২ মার্চ) সকালে সাংবাদিকদের তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা।তিনি জানান, পঞ্চগড়ের সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ২০টি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে সদর থানায় ১৫টি ও বোদা থানায় ৫টি। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ, সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নাশকতায় অংশগ্রহণকারী দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তাই কোনো নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ এলে তা গুরত্ব দিয়ে দেখা হবে। তবে মামলা ও আসামি বেশি হওয়ার বিষয়টি নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ায় লোকজনের মধ্যে স্বাভাবিক কারণে কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে।

গত ৩ মার্চ ঘটনার আলোকে শুক্রবার জুমার নামাজের পর জেলা শহরে ও কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের আবাসস্থলের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আহমদিয়াদের (কাদিয়ানী) দুটি মসজিদের আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ও র‍্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়। জেলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও সুশৃঙ্খল রাখতে জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জনাব এস. এম. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) কনক কুমার দাস ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ রাকিবুল ইসলাম স্ব-শরীরে জেলার আইনশৃঙ্খলা ডিউটি তদারকি করেন ও বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

গত ৩ মার্চ আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) বার্ষিক সালানা জলসাকে কেন্দ্র করে জুমার নামাজের পর মুসল্লিদের বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেওয়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে মুসল্লিরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও অসংখ্য টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় দুইজনের প্রাণহানি ঘটে।

সংঘর্ষের সময় বিক্ষোভকারী জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় চলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ। পুলিশ ও বিজিবির গাড়ি ভাঙচুর, ট্রাফিক পুলিশের অফিসে অগ্নিসংযোগসহ জেলা শহরের আহমদিয়াদের চারটি দোকানে আগুন ও বেশকিছু বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা পঞ্চগড়। সেদিন রাত ৯টার দিকে জলসা স্থগিত ঘোষণা করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

৪ মার্চ শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর আবারও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পঞ্চগড় শহর। গুজব ছড়িয়ে পড়ে ‘আহমদিয়া সম্প্রদায়ের (কাদিয়ানী) লোকজন দুজনকে গলাকেটে হত্যা করেছে। এমন গুজবে বিক্ষুব্ধ হয়ে কিছু মানুষ লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানপাট ভাঙচুর, লুটপাটসহ শহরের ট্রাক-টার্মিনালে একটি মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দেয় তারা।