২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ১১:২৬
শিরোনাম:

ফেঁসে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির নেতা কাজী মামুনুর রশীদ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ফেঁসে যাচ্ছেন জাতীয় পার্টির নেতা কাজী মামুনুর রশীদ। তিনি বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের মুখপাত্র এবং ঢাকা ১৭ আসনে লাঙ্গল প্রতিকে ঘোষিত প্রার্থী। দূর্নীতি দমন কমিশনে দায়েরকৃত অভিযোগের দীর্ঘ তদন্ত শেষে অবৈধভাবে প্রায় ১৩০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের প্রমান পায় কমিশন। এ বিষয়ে তাকে দুদকে হাজির হতে বলা হলেও তিনি আসেননি।

দুদকের কর্মকর্তারা বলছেন, তিনি যেহেতু দুদকে তার বক্তব্য প্রদানে অনুপস্থিত। এতে করে আমরা ধরেই নিতে পারি তার এ বিষয়ে কোন বক্তব্য নাই। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, গ্রেফতারসহ নানা আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে। এগুলো পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবো।

জানা যায়, জাপা নেতা কাজি মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে কয়েকশ’ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আসে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকে। দুদক অভিযোগটি আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে প্রায় ১২০ কোটি টাকার মত জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পায় কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক এক কর্মকর্তা বলেন, তিনি এই টাকার সম্পদ কিভাবে পেয়েছেন বা আয়ের সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারেননি। তা থেকে ধরে নেয়া যায় তার এই সম্পদ কোন না কোন অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জন করেছেন। অবৈধ অর্থ উপার্জনের সহায়তায় সরকারের ঊর্ধতন অন্তত ২০ কর্মকর্তার জড়িত থাকার সত্যতা পেয়েছে দুদক।

কর্মকর্তা বলেন, অনুসন্ধান শেষে কাজি মামুনুর রশিদকে দুদকে উপস্থিত হয়ে তার বক্তব্য প্রদানের জন্য গত ২৯ মে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে ৬ জুন দুদকে স্ব-শরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। একই সঙ্গে চিঠিতে বলা হয়, তিনি যদি উপস্থিত না হন তবে কমিশন ধরে নেবে তার এ বিষয়ে কোন বক্তব্য নাই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গতকাল মঙ্গলবার ৬ জুন তিনি উপস্থিত হননি। দীর্ঘসময় তার জন্য অপেক্ষাও করেন কর্মকর্তারা।
মামলার অনুসন্ধান টিমের সদস্য ও দুদকের উপ-পরিচালক রতন কুমার দাস বলেন, অনুসন্ধানের পরবর্তী ধাপে কি হবে এটা সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। আমাদের অনুসন্ধান শেষে তাকে আমরা দুদকে তার বক্তব্যের জন্য ডেকেছিলাম তিনি আসেন নি। যেহেতু তিনি আসেননি সেহেতু পরবর্তী করনীয় কি সেটা আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে এগুবো।

এদিকে দুদকের একটি সূত্র বলছে, অভিযোগের তদন্ত শেষ। তদন্তে অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে। তিনি কমিশনে আসলে তার বক্তব্য শুনে পরবর্তী করনীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন। তবে এখন দুদক তার এবং তার প্রতিষ্ঠান এক্সট্রেঞ্জা ফার্মাসিউটিকাল লিমিটেড সহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হবে।আগামীকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দুদক থেকে ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আবেদন সহ চিঠি পাঠাব হবে। পরবর্তীতে মামলা করে গ্রেফতারের দিকে যেতে পারে। আরও জানা যায় কাজী মামুনুর রশিদের বড় ছেলে সিয়াম যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন। কাজী মামুনের রশিদের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের ঘন ঘন দেশে বাইরে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার ও যুক্তরাষ্ট্রে সহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচারের তথ্য পেয়েছে সিআইডি। অচিরেই মানিলন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করবে সিআইডি।

অভিযোগের বিষয়ে কাজী মামুনুর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তো অসুস্থ। আমার আইনজীবি কি করেছে সেটা আমি জানিনা। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এই অভিযোগের যিনি তদন্ত কর্মকর্তা তার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারেন।