১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:৫০
শিরোনাম:

গজারিয়ায় শিক্ষক বিহীন চলছে বিদ্যালয়

নেয়ামুল হক গজারিয়া প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার গোয়াগাছিয়া ইউনিয়নের ৩১ নং চরচাষী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি  যেন একটি জলে ভাসা নৌকা। মেঘনা ও গোমতী নদীর মধ্যখানে জেগে ওঠা চড়ে দীর্ঘ ৭০ বছর পূর্বে জনবসতি গড়ে ওঠে।
এই চরাঞ্চলের গ্রামটি এই বিদ্যালয় থেকে বহু ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত রয়েছে।
কালের পরিকর্মায় শিক্ষার উন্নয়ন পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হলেও ছোয়ালাগেনি এ বিদ্যালয়ে। অভিভাবকের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বেড়ে কমলমতি ছেলে মেয়েদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য বিদ্যালয় প্রেরনে আগ্রহ বেড়ে যায়।
প্রথম শ্রেণি হতে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য শিক্ষকদের সাতটি পোস্ট থাকলেও তিন জন শিক্ষক দিয়ে চলছে প্রতিদিনের ক্লাস রুটিন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় তিনজন শিক্ষকের মধ্যে সহকারী শিক্ষক শিখা আক্তার  মাতৃকালীন ছুটিতে। অন্য সহকারি শিক্ষক মিজানুর রহমান বিনা নোটিশে তিনদিন যাবত অনুপস্থিত। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাজেরা আক্তার প্রতিদিন ১১ টার পূর্বে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারেনা এ বিষয়ে জানান ৯,৩০মিঃ আমাদের ক্লাস আমি দশটায় আসি।
অদ্য সকাল ১০,৩০মিঃ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হাজেরা আক্তার পাঠদান বন্ধ রেখে বারান্দায় বসে দপ্তরির সাথে গল্পে মশগুল। অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীরা ক্লাসের ভিতর ও বাহিরে ছোটাছুটি করছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিস রুমে গিয়ে বিভিন্ন খাতা পত্র আলমারিতে ঢুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
শিক্ষকদের উপস্থিতি জানতে চাইলে বলেন সব শিক্ষকই উপস্থিত আছে। উপস্থিতির জবাব পরবর্তীতে ভুল স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বলেন সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান তিন দিন যাবত বিদ্যালয়ে আসে না। আরেক সহকারী শিক্ষক শিখা আক্তার মাতৃকালীন ছুটি ২০-০৭ ২০২৩ ইং তারিখ হতে ( মৌখিক) কার্যকর হলেও সাংবাদিকদের সামনে বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় সি এল ৩১-০৭-২০২৩ইং সকাল ১১ টা ৩০-এ লিপিবদ্ধ করা শুরু করে।
সহকারী শিক্ষক শিখা আক্তারের পরিবর্তে অন্য প্যারা এক শিক্ষক দিয়ে ক্লাস নেওয়ায় বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নিকট জানতে চাইলে প্যারা শিক্ষকের পরিচয় গোপন রেখে এড়িয়ে যান। ওই শিক্ষককে আকার ইঙ্গিতে চলে যাওয়া নির্দেশ দেন।
বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম, নিচতলা ও সামনের খেলাধুলার মাঠ অপরিচ্ছন্ন থাকায় প্রতিনিয়তই কমলমতি ছাত্রছাত্রী বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়েছেন বলে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা জানান।
বরাদ্দকৃত বিদ্যালয়টির হাই লো প্লাস্টিক বেঞ্চ অযত্নে অবহেলায় ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে  সরজমিনে দেখা যায় । উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য বেঞ্চের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এই বিদ্যালয় অতিরিক্ত অনেক বেঞ্চ অযত্নে অবহেলায় বিদ্যালয়ে নিচতলায় পড়ে আছে। চর চাষী গ্রামে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি বিহীন রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে  এই শিক্ষা সামগ্রী নিয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান।
বিদ্যালয়ে নিচতলায় একটি রুমে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের সড়কের কাজে ১৫ থেকে ২০ জন ঠিকাদারের শ্রমিক দীর্ঘ কয়েক মাস যাবত অবস্থান করছে। বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ, পানি ব্যবহার করায় বিল পরিশোধ করার বিষয়ে হুমকি দিয়ে অনীহা প্রকাশ করেন ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন। বিদ্যালয়ের ওয়াশরুম ব্যবহারের ফলে পরিত্যক্ত হওয়ার উপক্রম সরজমিনে তাই দেখা যায়।
কোন ছাত্র-ছাত্রী ওই ওয়াশরুমে যেতে পারে না বলে গণমাধ্যম কর্মীদের জানান।
৬০ ঊর্ধ্বে কয়েকজন প্রবীণ জানান বিদ্যালয়ের টির সুনাম ছিল, বিদ্যালয়ের শিক্ষক সময় মতো না আসায় আমরা অন্য উপজেলায় ছেলেমেয়েদের শিক্ষার জন্য ভর্তি করিয়েছি।
অভিভাবক কমিটির বিষয়ে তারা জানান তারা শুধু নামে আছে বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের তাদের কোন ভূমিকা নেই। বিদ্যালয়ের আয় ব্যয় সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকই জানেন।
শিক্ষক অনুপস্থিতির বিষয়ে গজারিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল কাদির জানান এ বিষয়ে আমি অবগত হলাম তাদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।