২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, দুপুর ১:২৭
শিরোনাম:

তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টেন্ডার জালিয়াতি, নিন্মমানের কাজ ও অনিয়মের মাধ্যমে বিল তুলে নেয়া সহ নানা কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। এই সিন্ডিকেটের মূল হোতা সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন। স¤প্রতি এনিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগও জমা পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ঈদেও পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের বিষয়টি নিয়ে নড়ে চড়ে বসেছে। বিশেষ করে তিনি রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে পদে যেতে চান। বর্তমান অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী অবসরে যাচ্ছেন। এখানে তিনি অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী হবেন।

একাধিক সূত্র জানায়, দুনীতিবাজ স্বাস্থ্য প্রকৌশলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের থেকে সিনিয়র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আরো ২জন আছেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী তালিকায়। কিন্তু দুনীতিবাজ আনোয়ার হোসেন সবাইকে ডিঙ্গিয়ে বাগিয়ে নিতে চাচ্ছেন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পদটি। তবে বর্তমানে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা দুনীতিবাজ কর্মকর্তাদের দূরে রাখছেন। এক্ষেত্রে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন পাবেন না। পাশাপাশি তিনি প্লানিং ও সমন্বয়কের কাজ করেন। যাতে ঢাকাতে থাকা যায়। তার চাকরি জীবনে সব চেয়ে বেশি সময় তিনি ঢাকাতে আছেন। পাশাপাশি যে পদে অবৈধ পš’ায় আয় করা যায় সে সব পদ তাকে বেশি টানে। নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে আলোচনায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল না মানা, প্রয়োজনের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ প্রাক্কলন ব্যয় এবং নি¤œমানের স্থাপনা নির্মাণের মতো অনিয়মের অভিযোগ আসছে অহরহ। এ ঘটনা নিয়মিত ঘটছে সংস্থাটিতে। এতে করে একদিকে সরকারের শত শত কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে। এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে জড়িত আছে একটি চμ।

অন্যদিকে দেশব্যাপী নির্মিত স্বাস্থ্য স্থাপনাগুলো মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। এসব অনিয়ম তদন্তে মাঝেমধ্যে তদন্ত কমিটি হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না। উপরন্তু দোষীদের পুরস্কৃত করে গুরুত্বপ‚র্ণ পদে পদায়ন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন স‚ত্রে অনিয়মের নানা চিত্র ধরা পড়েছে।

জানা যায়, ইজিপির আওতায় টেন্ডারে সু²ভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার ঘটনা অহরহই ঘটছে। ধূর্ত ও চতুর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন অপকৌশল প্রয়োগ করে কার্যাদেশ দিয়ে থাকেন। এইভাবে আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন যাবত প্রধান কার্যালয়ের টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। যার ফলস্বরূপ তার পছন্দের কয়েকজন ঠিকাদারকে ঘুরেফিরে কাজ পাইয়ে দেন। বিনিময়ে পকেটস্থ করেন ১৫শতাংশ হারে কমিশন। যা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে এখন ওপেন সিটে। অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডার মূল্যয়ন কমিটির সভাপতি হওয়ার সুবাধে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে তার নিজের শ্বশুরের মেসার্স নূরানী কনস্ট্রাকশন লি: কে কাজ পাইয়ে দেন, সর্বশেষ তিনি টাঙ্গাইল জেলায় ৩৬ কোটি টাকা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি নির্মাণ কাজটি তার শ্বশুলের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূরাণী কনস্ট্রাকশন লি: কে দিয়েছেন আর
এদিকে, নূরাণী কনস্ট্রাকশন লি: ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অন্যতম পরিচালক সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবন নির্মাণ কাজে প্রথম পর্যায়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। ঠিকাদারকে ভুয়া বিল দিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা ভাগাভাগি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে চার তলা ভবন নির্মাণে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু ভবনটির কলাম, বিম ও ছাদ ঢালাই করে ভুয়া পরিমাপ দিয়ে সমুদয় টাকা ব্যয় করা হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্তে কোটি কোটি টাকা ভুয়া বিল প্রদানের বিষয়টি ধরা পড়ে। ভবনটির নির্মাণকাজ চলাকালীন সময় সিটি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন,এইচইডি প্রধান কার্যালয়ে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন। তার তত্ত¡াবাধানে এই কাজটি সম্পর্ণ হয় এবং তিনি বিলে স্বাক্ষর করেন। অভিযোগ আছে, মাঠ পর্যায়ে যে সব প্রকৌশলী এসব পুকুর চুরি করেছিলেন তার দায় তাদের ওপর চাপানো হয়নি। উল্টো তাদেরকে পদোন্নতি দিয়ে প্রধান কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করা হয়েছে। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, মহাখালীতে স্বাস্থ্য ভবন নির্মাণে প্রথম ধাপের ২৯ শতাংশ কাজ করেই শতভাগ বিল তুলে নিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অবশিষ্ট ৭১ ভাগ কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত ১০ কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এইচইডি)।
এই ভবন নির্মাণের প্রথম ধাপে ৮৬৬ ধরনের কাজের জন্য মেসার্স বিবি অ্যান্ড ইউসিসি (জয়েন্ট ভেঞ্চার-জেভি) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু দৃশ্যমান অবকাঠামোর বেশির ভাগ ধরনের কাজও করেনি তারা। খোদ এইচইডির তদন্তে এমন ভয়াবহ দুর্নীতির তথ্য উঠে এসেছে।