২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, সকাল ৯:১০
শিরোনাম:

প্রেম, যৌনতা নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন ‘পাখি’ খ্যাত নায়িকা (ভিডিও)

কলকাতার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘বোঝে না সে বোঝে না’র ‘পাখি’খ্যাত জনপ্রিয় নায়িকা মধুমিতা সরকার নাম লিখিয়েছেন সিনেমাতেও। তার সাম্প্রতিক বিচ্ছেদ নিয়েও শোরগোল চলছে। এরই মধ্যে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রেম, যৌনতা নিয়ে খোলামেলা কথা বললেন  মধুমিতা সরকার।

ধারাবাহিক থেকে সিনেমায় যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে মধুমিতা বলেন, ‘একজন অভিনেত্রী সারা জীবনই কি ‘পাখি’ বা ‘ইমন’ শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, সাধারণ মেয়ে, এভাবেই থেকে যাবে তা কি হয়? সে তো নিজেকে ভাঙবে!

ভাঙতে গিয়ে সে একেবারে প্রেম আর যৌনদৃশ্যে পৌঁছে গেল? জবাবে মধুমিতা বলেন, ‘প্রসঙ্গটা তুলে ভালোই করেছেন। এখানে আমি কিছু বলতে চাই। ২০২০-তে দাঁড়িয়ে প্রেমের ছবিতে কোনো যৌনতা থাকবে না এটা আশা করাটাই তো ভুল। আপনি ভাবুন, প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়ে যদি বন্ধু হয়, তারা একান্তে কোনো জায়গায় তিন-চার ঘণ্টা সময় কাটাতে পারে, তা হলে তারা কিস করবে না? আমরা বাঙালিরা সব করব। ইংরেজি ছবিতে অবাধ যৌন দৃশ্য দেখব। বিদেশিদের অজস্র বার চুমু খেতে দেখব। এখন এখানেও পার্কে আমরা তরুণ-তরুণীকে চুমু খেতে দেখি। তার জন্য নেটফ্লিক্সেও যেতে হবে না। কিন্তু সেটা বাংলা ছবিতে দেখতে পেলেই একেবারে রে রে করে উঠব! এ রকম আর কত দিন চলবে বলুন তো? আসলে প্রপার সেক্স এডুকেশনের অভাব। আমি অস্ট্রেলিয়াতে তো যা খুশি পরে ঘুরে বেড়াতে পারি। কিন্তু যেই এখানে আসি আমাকে দেখতে ভালো লাগলেও চট করে সব রকমের পোশাক পরতে পারি না।’

প্রথম সিনেমায় কিসিং সিনে কতটা স্বাচ্ছন্দ্য ছিলেন আপনি? জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার কাছে কোনো দিন ছেলেমেয়ে বলে আলাদা ইনহিবিশন ছিল না।আমি দামিনী বসুর ওয়ার্কশপ করেছি। আজ যেখানে বসে আপনার সঙ্গে কথা বলছি সেখানেই প্রতীমদা আমায় এই ‘লাভ আজ কাল পরশু’-র চিত্রনাট্য পড়তে বলে। আমিও পড়তে পড়তেই চিত্রনাট্যের লোভে পড়ে যাই। যাই হোক, প্রথমেই এত বড় সুযোগ। প্রতীমদার ছবি। সঙ্গে অর্জুন আর পাওলিদি। সত্যি কথা বলতে কি, ভেবেছিলাম কিসিং সিনটা কেমন হবে? প্রতীমদাকে বলেছিলাম, এই বাড়ির বউ দেখা আমাকে অন্তরঙ্গ দৃশ্যে দেখলে দর্শক কী ভাববে? তখন কি ইউনিটের সবাই থাকবে? নাকি অন্য কিছু হবে? তার পর দেখলাম, শুট করতে করতে জাস্ট হয়ে গেল। অন্য আর একটা সিনের মতোই।

নায়ক অর্জুন প্রসঙ্গে মধুমিতা বলেন, ‘লাভ আজ কাল পরশু’র টিজার বেরোনোর পর আমার আর অর্জুনের অন্তরঙ্গ দৃশ্য দেখে মিডিয়ায় যেভাবে সেটাকে তুলে ধরেছিল! কিছু বলার নেই। অর্জুন এত ট্যালেন্টেড একজন মানুষ। ওর একটা হ্যাপি ফ্যামিলি আছে। বাচ্চা আছে। ওর বউকে শুদ্ধু টেনে এনে…’

মিডিয়ার গুজব ও গুঞ্জন নিয়ে তিনি বলেন, ‘খবরে প্রত্যেক বছরে আমাকে মারা হয়। ইউটিউবে যাবেন, দেখবেন ডেথ লিস্টে আছি আমি। আমার মা কত বার ফোন করে বলেছে, তুই হসপিটালে? আমি নাকি প্রত্যেক বছর সুইসাইড করি। এমনকি আমি যে ধারাবাহিকে কাজ করেছি সেখানকার এক অভিনেত্রী আত্মহত্যা করেছিল। আমার ছবি দিয়ে সেই খবর বেরিয়েছিল। আমার ডিভোর্স হল। মিডিয়া বলতে শুরু করল, আমার অন্য পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক আছে। তাই ডিভোর্স। মানে অন্য কোনো কারণ থাকতেই পারে না। আমি মানছি সব দোষ মিডিয়ার নয়। মানুষ যা পড়তে চাইছে। যে ছবি যে গসিপের লাইক ভিউ বেশি মিডিয়া সেই স্টোরি করতে বাধ্য হচ্ছে। কিন্তু একজন আফিম খেতে ভালবাসলেই রোজ আমি তাকে আফিমই খাওয়াব? মিডিয়াই তো পারে মানুষকে তৈরি করা স্টোরি না দিয়ে বিকল্প স্টোরির অভ্যেস করাতে? মিডিয়ায় শিক্ষিত মানুষ আছেন তারাই পারবেন মোড় ঘোরাতে।

ধারাবাহিকের নায়িকা হয়ে সিনেমা করতে এসে আপনি কোন বিকল্প পথ ধরলেন? জবাবে মধুমিতা বলেন, ‘আমি অর্জুনের সঙ্গে এ ছবিতে অভিনয় করব। তাই অর্জুনের সব ছবি দেখেছি। ও কোথায় কেমন রিঅ্যাকশন দেয় সেটা বোঝার চেষ্টা করেছি। প্রতীমদা কিছু বিদেশি ফিল্ম দেখতে বলেছিল। সেগুলো মন দিয়ে দেখেছি। খুব বড় চ্যালেঞ্জ ছিল এই ছবিটা আমার জন্য। এখানে তিনটা লাভ ফর্ম আছে। সেটা এক সুতোয় বাঁধা। আমার অভিনয়ে একটু লাউড চলে এলে তা হলে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে। অর্জুন পাওলিদি প্রতীমদা মনেই হতে দেয়নি, এটা আমার প্রথম ছবি! কিন্তু আমার এখনো একটা ভয় থেকে যাচ্ছে, আমার ফ্যান যারা তারা ধারাবাহিকে আমায় দেখে অভ্যস্থ। তারা এই আরবান ছবিকে কেমন করে নেবে? আমায় কেমন করে নেবে? আমি জানি তারা এখন হইচই দেখছে। তাদেরও স্বাদ বদলেছে। কিন্তু তারা এই ছবিতে পাখিকে দেখতে চাইলে খুব মুশকিল হবে।’

আপনি সেটে নাকি মনিটর দেখতেন? ‘হ্যাঁ। আমি বসে থাকতে পারি না। পাওলিদিকে দেখতাম। প্রত্যেক ফ্রেমে পাওলিদি আলাদা। এত শক্তিশালী অভিনেত্রী। আমিও চেষ্টা করেছি অভিজ্ঞতা দিয়ে চরিত্র তৈরি করার।’

জীবনের ভাঙনের জায়গা নিশ্চয়ই অভিনয়ে এসেছে? জবাবে মধুমিতা বলেন, ‘হ্যাঁ, ভাঙতে গিয়ে দেখেছি সবকিছু ম্যাজিকাল নয়। স্বপ্নের মতো সফল নয়। জীবনে যে কোনো ধরনের শকের জন্য আমি প্রস্তুত।’