৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:৩২
শিরোনাম:

লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না ওএমএস’র চাল

দেশজুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা দিতেই উপার্জন হারানো অনেকেই রাজধানী ছেড়েছেন। কাজ না থাকায় অনেকেই পড়েছেন চরম বিপাকে। নগরীর মোড়ে মোড়ে ওএমএস’র লাইনে এসব নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড়ও বাড়ছে।

এদিকে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকে পণ্য ক্রয় করতে না পেরে ফিরছেন খালি হাতে। রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দুপুরে রাজধানীর মধ্য বাসাবো সবুজবাগে গিয়ে দেখা যায় লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কিনছে মানুষ। হঠাৎ মুষল ধারে বৃষ্টিতে ডিলার বিক্রি বন্ধ করে দিলেও লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ।

এ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লায়লা বেগম জানান, পাশের একটি বস্তিতে থাকেন তিনি। তার স্বামী সিএনজি চালক। লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন। তিনি নিজেও বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করেন।

তিনি বলেন, হঠাৎ করোনা বেড়ে যাওয়া কাজে কিছুদিন যেতে নিষেধ করেছেন বাড়িওয়ালা।

মেয়ে কুসুমকে নিয়ে লায়লা বেগম এসেছেন লাইনে দাঁড়িয়ে চাল-আটা কিনতে। হঠাৎ বৃষ্টিতে মা-মেয়ে দুজনেই ভিজছেন। বললেন, ‘তাও যদি গতকালের মতো থালি হাতে ফিরতে না হয়।’

এক প্রশ্নে লায়লা বেগম দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘লাইন ছেড়ে গেলে ওরা (অন্যরা) জায়গা দিবো না। মেয়েটার জ্বর, তবুও আইছে আমার লগে। ওর বাপটাতো ঘরে বইয়াই রইছে। বলেন দেহি স্যার, এসব লকডাউন কি শুধু আমাগো গরিবের লাইগা?’

এ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরও বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। মধ্যবয়সী আসমা জানান, একটি কিন্ডারগার্টেনে পড়াতেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ হয়েছে ১ বছর আগেই। টিউশন করালেও এখন তাও বন্ধ। কিছু কমে পণ্য পাওয়ার আশায় দাঁড়িয়েছেন লাইনে।

তিনি বলেন, সকালে দাঁড়িয়েছেন দীর্ঘ লাইনে। এর মধ্যে দুইবার বৃষ্টি এসেছে। এত বড় লাইন, বুঝতে পারছি না আজও পাবো কিনা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলমান লকডাউনের শুরু হওয়ার পর থেকেই ওএমএসের ট্রাকে চাল বিক্রি বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় আগের তুলনায় বেড়েছে দ্বিগুণ।

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ওএমএসের দোকানে কিংবা ট্রাকে ৩০ টাকা কেজিতে চাল ও ১৮ টাকা কেজিতে খোলা আটা বিক্রি করা হয়। এসব কেন্দ্রে থেকে একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ পাঁচ কেজি চাল ও পাঁচ কেজি আটা নিতে পারেন।

এ সময় ওএমএসের ডিলার জালাল উদ্দিন রাজ দেশ রূপান্তরকে বলেন, লকডাউনের আগে যতগুলো ট্রাকে নগরীর যে সব জায়গায় ট্রাক সেল করা হতো, এখনো তাই হচ্ছে। চাহিদা বাড়লেও পরিমাণ বাড়েনি।

এ সময় এ ডিলার আরও বলেন, চাল-আটার জন্য কয়েক দিন ধরে ভিড় বেড়েছে। আগে বিক্রি বিকেল পর্যন্ত চলতো, এখন দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। সরকারিভাবে প্রতিদিন এক হাজার কেজি চাল ও এক হাজার কেজি আটা বরাদ্দ থাকে।