৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১২:১৫
শিরোনাম:

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ী টেস্টে বাংলাদেশের বড় জয়

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের শেষ টেস্টে জয় উপহার দিলেন সতীর্থরা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশ ২২০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে। প্রথম ইংনিংসে বাংলাদেশের হয়ে শুধু স্পিনাররা রাজত্ব করলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল পেসার তাসকিনেরও দাপট। তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন ৪ উইকেট। অন্যদিকে মেহেদী হাসান মিরাজ ৪টি, সাকিব ও এবাদত হোসেন ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। তাদের দাপটে জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২৫৬ রানে। ফলে বাংলাদেশ ২২০ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায়।

হারারে টেস্টে পঞ্চম দিনে রোববার (১১ জুলাই) জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ৭ উইকেট আর জিম্বাবুয়ের ৩৩৭ রান। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩ উইকেটে ১৪০ রান করে চতুর্থ দিন শেষ করে স্বাগতিকরা। ৫ম দিনে খেলতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জিম্বাবুয়ের ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ের পক্ষে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন।
এর আগে দ্বিতীয় ইনিংসে শান্ত এবং সাদমানের সেঞ্চুরিতে ১ উইকেটে ২৮৪ রান সংগ্রহ করে ইনিংস ঘোষণা করেন মুমিনুল হক। ফলে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৭৭ রান।

বিনা উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামেন সাইফ-সাদমান। দলীয় ৮৮ রানে আউট হন সাইফ। এরপর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মারমুখী ব্যাট করতে থাকেন শান্ত-সাদমান। লাঞ্চের পরেই সেঞ্চুরি তুলে নেন এই দুই ব্যাটার। ওয়ানডে মেজাজে খেলতে থাকেন শান্ত। ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাকানো সাদমান ১১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। শান্ত করেন ১১৭ রান।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৪৬৮ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে করে ২৭৬ রান। বাংলাদেশের ইনিংসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া লিটন দাস ৯৫, তাসকিন আহমেদ ৭৫ ও মুমিনুল হক করেন ৭০ রান।

অন্যদিকে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে মিরাজ ৫টি ও সাকিব ৪টি উইকেট শিকার করেন। এদিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলে ফেললেন রিয়াদ। বেশকিছু দিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অবসরের। অবশেষে গুঞ্জনটা সত্যিই হলো। তবে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানাননি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
হারারে টেস্টের শেষ দিনে দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। টেস্টের পঞ্চম দিনে মাঠে নামার আগে দলের সব ক্রিকেটাররা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ব্যাট তুলে, গার্ড অব অনার দিলেন মাহমুদউল্লাহকে। খেলা শুরুর আগে এমন চিত্রে স্পষ্ট এলিট ক্রিকেটে আর খেলবেন না সাইলেন্ট কিলার। এর আগে, টেস্টের তৃতীয় দিনে ড্রেসিং রুমে টিম মিটিংয়ে রিয়াদ জানিয়েছিলেন, তিনি আর টেস্ট খেলবেন না।
গেল বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলার পর দল থেকে বাদ পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এমনকি গত বছরের মার্চে বিসিবি ঘোষিত কেন্দ্রীয় টেস্ট চুক্তিতে ছিলেন না মাহমুদউল্লাহ। স্বাভাবিকভাবেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে লাল বলে উপেক্ষিত ছিলেন তিনি। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পান ১৬ মাস পর। মিডল অর্ডারের গুরুত্বপূর্ণ এই ব্যাটসম্যানকে খেলানো হয় লেট অর্ডারে ৮ নম্বরে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ফিরেই নিজেকে চিনিয়েছেন এই অলরাউন্ডার।

দলের মহাবিপদে ধরেন হাল। দলকে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে নিতে মাহমুদউল্লাহর ছিল বড় ভূমিকা। দীর্ঘ ১৬ মাস পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই ক্যারিয়ার সেরা দেড়শ’ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি।
হারারে টেস্টের পঞ্চম দিন রোববার (১১ জুলাই) সকালে সতীর্থরা তাকে ‘গার্ড অব অনার‘ দিয়েছেন। ড্রেসিং রুম থেকে মাঠে প্রবেশের পথে তামিম, সাকিব, মুমিনুল, লিটনরা দুই পাশে দাঁড়িয়ে তাকে সম্মান জানান। মাহমুদউল্লাহ হাসিমুখে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এ সময় ধারাভাষ্য বক্স থেকে শামীম আশরাফ চৌধুরী জানান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছেন। এজন্য সতীর্থরা তাকে গার্ড অব অনার দিয়েছে। এই টেস্টের পর বাংলাদেশ দীর্ঘদিন টেস্ট ম্যাচ খেলবে না। তার সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সতীর্থরা গার্ড অব অনার দিয়েছে। ২০০৯ সালে কিংসটন টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল ৩৫ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। ক্যারিয়ারে ৫০ টেস্টে ৩৩ দশমিক ৪৯ গড়ে রিয়াদ করেছেন ২ হাজার ৯১৪ রান। যেখানে তার ৫টি সেঞ্চুরি রয়েছে।