গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের দাসেরগাঁও গ্রামের মৃত্যু মোতালেব মিয়ার ছেলে তাজুল ইসলাম ও তার মা হাজেরা বেগমের নির্যাতনে বিষপানে আত্মহত্যা করলো দুই সন্তানের জননী সালমা আক্তার (২৫) ।
ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায় শাশুড়ি হাজেরা বেগম পুত্রবধূ সালমাকে সব সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩-১০-২২) মাগরিব নামাজের পর হতে দুধ বিক্রিয় কে কেন্দ্র করে পুত্রবধূ সালমার বিষয়ে ছেলে তাজুলের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দিলে স্বামী নির্যাতন শুরু করে।
সালমার ডাক চিৎকারে প্রতিবেশী উম্মে হানি স্বামী মাইনুদ্দিন ঘটনাস্থলে পৌছলে তার সামনেই নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শাশুড়ি হাজেরার অকথ্য গালাগালি ও স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বসত ঘরে গিয়ে কিটনাশক পান করে।
প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী উম্মে হানি জানান সালমা দুই সন্তানের জননী। সংসারে স্বচ্ছলতার জন্য পর্দার সহিত কঠোর পরিশ্রম করে দশটি গরু ও ১৫ টি ছাগল প্রতিদিন ঘাস কেটে লালন-পালন করে। তার ব্যাপারে কোন প্রকার অভিযোগ নেই কারো। মহল্লার সামাজিক কাজের সার্বিক সহযোগিতা করতো সালমা।
স্বামী শাশুড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তাদের সামনেই বিষ পান করে। বিষ পানে ছটফট করতে থাকলে আমি বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করলেও শাশুড়ি ও স্বামী বাঁচানোর চেষ্টা না করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়।
রাত দশটার দিকে আমার স্বামী মাইনুদ্দিন বাড়িতে আসলে ঘটনা আমার কাছ থেকে শোনার পর তাজুলদের বাড়িতে যায়। তখন সালমা বিষ পানের যন্ত্রণায় কাতর দেখে স্বামী তাজলকে নিয়ে অটো গাড়ী যোগে মদনপুর আল-বারাকা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল প্রেরণ করে। রাতে সেখানেই সালমার মৃত্যু হয়।
সালমার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর এলাকাবাসী স্বামী তাজুল ইসলাম ও তার মা হাজেরা বেগমের বিচার ও ফাঁসি চেয়ে ব্যানার টাঙ্গিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
দুই সন্তানের জননী সালমা বেগম ১২ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে তাজুল ইসলামের সাথে বিয়ে হয়। তার বাবার বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার উত্তর ফুলদী গ্রামে। তার বাবা একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী বলে জানা যায়।
এই অপমৃত্যুর বিষয়ে বন্দর থানার কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কৃষ্ণ পোদ্দার জানান সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে গেলে সার্বিক বিষয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জানা যায় শাশুড়ির প্ররোচনায় ও স্বামীর নির্যাতনে এ ঘটনা ঘটে। স্বামী তাজুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসি শাশুড়ি হাজেরা কে গ্রাম পুলিশের জিম্মায় রেখে আসি। লাশের ময়না তদন্ত শেষে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।