৯ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ৯:১৯
শিরোনাম:

ছেলে হারিয়ে ঋণের বোঝা মা-বাবার কাঁধে

সৌদি আরবে ওমরাহ যাওয়ার পথে বাস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার তথ্য মিলেছে। এদের মধ্যে একজন তুষার মজুমদার। তার বাড়ি চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায়।

পরিবারের বড় ছেলে তুষার। তার অকাল মৃত্যুতে পরিবারের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার। তাইতো শেষ বারের মতো সন্তানের মরদেহ দেখতে চান পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার খাদেরগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘিলাতলী গ্রামের মজুমদার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে তুষারের মা-বাবাসহ আত্মীয় স্বজনদের আহাজারি। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে সকলের আদরের ছিলেন তুষার। মা-বাবা, ছোট এক ভাই ও এক বোন নিয়ে ছিল তাদের পরিবার।

তুষারের বাবা মনির হোসেন মজুমদার বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন নানা রোগে অসুস্থ। অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতাম। অটোরিকশাও চোরে নিয়ে গেছে। আমার ছেলের উপার্জনেই চলছিল সংসার। আবার ছেলে ওমরাহ যাওয়ার আগে বলেছে ওমরাহ শেষ করে এসে ফোন দিবে এবং বাড়িতে টাকা পাঠাবে। ফোন করে নানা পরিকল্পনার কথা বলত আমার ছেলে। সব কিছুই শেষ হয়ে গেল।’

মা মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘গত ১১ মাস আগে আমার ছেলে সৌদিতে গেছে। প্রথমে ভাল কাজ পায়নি। কিছুদিন আগে একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়েছে। তারাই ওমরাহ করার জন্য পাঠিয়েছে। তার বাবা অসুস্থ থাকায় বিভিন্ন সমিতি ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ করে তাকে সৌদিতে পাঠিয়েছি। এখন আমরা কিভাবে ঋণ পরিশোধ করব বুঝতে পারছি না।’

মজুমদার বাড়ির বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মজুমদার বলেন, ‘তুষার খুবই ভাল ছিল। সে এসএসসি পাশ করার পরেই সংসারের হাল ধরে। স্থানীয় একটি মুদি দোকানে কাজ করত। তার বাবা-মা ঋণ করে সৌদিতে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনায় তাদের সব শেষ হয়ে গেল। সরকার যদি তাদের পাশে না দাঁড়ায় পরিবারটি খুবই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।’

স্বজনদের আহাজারি

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (ইউপি) মো. মোস্তফা খন্দকার বলেন, ‘শুধুমাত্র জনপ্রতিনিধি হিসেবে না, প্রতিবেশী হিসেব বলব, সরকার যেন তুষারের মরদেহ দেশে আনার ব্যবস্থা করে। পাশাপাশি ঋণগ্রস্থ এই পরিবারের প্রতি সরকার সদয় হয়।’