৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১:২৭
শিরোনাম:

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম না রাখার ‘তিন কারণ’

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে না। ৩০০ আসনেই ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে কমিশনের ১৭তম সভা শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

পরিকল্পনায় থাকার পরও কেন ইভিএম ব্যবহার থেকে নির্বাচন কমিশন সরে এসেছে, এর পেছনে তিনটি কারণ উল্লেখ করেন ইসি সচিব। তিনি জানান, টাকার বরাদ্দ না হওয়া, সময়ের স্বল্পতা ও রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকায় কমিশন আগের এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে।

মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘এর কারণ হলো, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ইভিএম মেশিনের জন্য ১২৫৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। এই টাকাপ্রাপ্তির অনিশ্চয়তার কারণে নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।’

সাংবাদিকরা জানতে চান, আগে তো বলেছিলেন, ১৫০ থেকে ১৬০টি আসনে ইভিএমে ভোট করার সক্ষমতা রয়েছে, ওটাও হারাল কেন? উত্তরে সচিব বলেন, ‘প্রথম হচ্ছে, স্থানীয় নির্বাচনে সকল পর্যায়ে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হবে। এই কার্যক্রম চলমান আছে এবং সেটা অব্যাহত থাকবে।’

শুধু টাকার কারণেই জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম থেকে সরে আসা, নাকি অন্য কোনো কারণ ছিল—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনের সচিব হিসেবে কমিশনের সিদ্ধান্ত জানানোর আইনানুগ অধিকার রয়েছে। কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কী ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল, সেটা কমিশনের কাছ থেকে জানতে অনুরোধ করছি।’

তখন সচিবকে এক সাংবাদিক বলেন, ‘আপনি তো কমিশনের মুখপাত্র।’ এ সময় ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘এটার ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, ১৫০টি আসনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের জন্য প্রথম সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়। সেক্ষেত্রে একটি প্রকল্প দেওয়া হয় ৮ হাজার কোটি টাকা প্রায়। সেই প্রকল্প প্ল্যানিং কমিশন গ্রহণ না করাতে পরবর্তীতে যারা ইভিএম মেশিন সরবরাহ করেছিল, তাদের সাথে বিভিন্ন সময় সভা করার পরে তারা বলেছেন, এই মেশিনগুলোকে পুনরায় সম্পূর্ণরূপে রিফারবিশম্যান্ট (মেরামত) করে ১ লাখ ১০ হাজার মেশিন নির্বাচন উপযোগী করতে হলে ১২৬০ কোটি টাকার মতো প্রয়োজন হবে। সেই টাকা অর্থমন্ত্রণালয় থেকে চাওয়া হয়েছিল, অর্থ মন্ত্রণালয় সেটা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তবে নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য যাবতীয় অর্থ সেটা আগামী অর্থবছরে পাওয়া যাবে, এ মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করেছে।’

সচিব আরও বলেন, ‘যেহেতু সকল মেশিনগুলোকে রিফারবিশম্যান্ট করে নির্বাচন উপযোগী করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ নির্বাচন কমিশনের হাতে এই মুহূর্তে নেই এবং এগুলো অত্যন্ত সময়সাপেক্ষ বিষয়। এর সাথে কিছু হয়তো বিদেশ থেকে আমদানি করতে হতো, সুতরাং নির্বাচনের আগে যে সময়, আমাদের মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি চেয়েছিল, সেই সময়স্বল্পতা এবং অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ পাওয়ার নিশ্চয়তা না পাওয়া এবং রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে যে ঐক্যমতের অভাব রয়েছে, এই ইভিএম মেশিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে—সকল কিছু বিবেচনা করে হয়তোবা নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।’