৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১১:৫১
শিরোনাম:

আওয়ামী লীগ অগ্নি-সন্ত্রাসের হোতা: মির্জা ফখরুল

‘বিএনপি অগ্নি-সন্ত্রাস শুরু করছে’, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের পাল্টা উত্তর দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন আওয়ামী লীগই অগ্নি-সন্ত্রাসের হোতা, জন্মদাতা। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে গত সোমবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্তসমূহ তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব। বঙ্গবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার জন্য সরকারের ব্যর্থতার কঠোর সমালোচনা করে এসব অগ্নিকাণ্ডের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবিও জানিয়েছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে দলের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও সদস্যসচিব শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অগ্নি-সন্ত্রাসের হোতা, জন্মদাতা হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আমরা (বিএনপি) কখনোই অগ্নি-সন্ত্রাস করিনি। এই সন্ত্রাস তো তাদের (আওয়ামী লীগ) জিনের মধ্যে, জিনে আছে। তাদের বডি কেমিস্ট্রিতে সন্ত্রাস ও দুর্নীতি আছে। এখান থেকে তারা বের হতে পারেন না। যখন ক্ষমতা পায়, তখন বর্গিদের মতো লুট করে নিয়ে চলে যায়- এটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’

রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটের আগুন লাগার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছেই না। ফায়ার সার্ভিস বলছে, এটা শট-সার্কিটে হতে পারে। দায়িত্বপ্রাপ্ত যারা তাদের কথা বলার আগেই ‘‘তথাকথিত অবৈধ’’ প্রধানমন্ত্রী বলে দিলেন এটাতে বিএনপি জড়িত আছে কি না, দেখতে হবে। এখন উনারা (আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক) বলছেন, অগ্নি-সন্ত্রাস করে বিএনপি। আরে অগ্নি সন্ত্রাসের মূল হোতা আওয়ামী লীগ।’

‘আওয়ামী লীগ বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দেয়’

সম্প্রতি, ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সাথে বিএনপি নেতাদের বৈঠকের পর ক্ষমতাসীনদের দিক থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে বিদেশীদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদেশিদের কাছে আমরা যাই না। বিদেশিরা আমাদেরকে আমন্ত্রণ করেছে বলে গিয়েছি। প্রত্যেকবার যতবার আমরা গেছি তাদের আমন্ত্রণে গেছি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের চাইতে শত ভাগ বেশি তারা (আওয়ামী লীগ) গেছে, এখনও যাচ্ছে। সেইদিনও ওবায়দুল কাদের সাহেব (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক) তাদের টিম নিয়ে আমেরিকান অ্যাম্বাসেডরের কাছে গিয়েছেন। তাহলে সেটা কি? ধর্ণা কে দিচ্ছে?’

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটাই কথা- জনগণ বর্তমান সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাদের উচিত হবে সরকারকে পদত্যাগ করা, সংসদ বিলুপ্ত করা এবং একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হন্তান্তর করে নতুন নির্বাচন কমিশন করে করে নির্বাচন করা, এটা মেনে নেওয়া। এটাই হচ্ছে একমাত্র পথ।’

‘বিরোধী নেতাদের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার নীলনকশা’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবৈধ সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে তারা আসন্ন যে নির্বাচন হওয়ার কথা সেই নির্বাচনের আগেই বিএনপিকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই পরিকল্পনা মধ্যে আছে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাদেরকে আটকে রাখা। আর জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা যেমন হাবিবুল ইসলাম হাবিব তিনবারের সংসদ সদস্য, নিজ এলাকায় জনপ্রিয় নেতা এরকম নেতাদের মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাদেরকে আটকিয়ে রাখার একটা প্রক্রিয়া তারা ইতোমধ্যে শুরু করেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখা তৎকালীন ছাত্র নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব তার নিজ এলাকার মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা ও লড়াকু মানুষ। গত ৩৫ বছরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে যতগুলো আন্দোলন হয়েছে, প্রত্যেকটা আন্দোলনে তিনি একজন সম্মুখসারির নেতা- এই ধরনের একজন রাজনৈতিক নেতাকে ২১ বছর পরে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া- এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, চক্রান্তমূলক, প্রতিহিংসামূলক। এই সাজা সম্পূর্ণ ন্যায়বিচার পরিপন্থি এবং আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’